আজ , বুধবার, ২১ মে ২০২৫

রাউজানে প্রকাশ্যে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা তিন দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় হত্যাকাণ্ডে এলাকায় চরম আতঙ্ক

লেখক : সাহেদুর রহমান মোরশেদ | প্রকাশ: ২০২৫-০৪-২২ ২০:০৭:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

চট্টগ্রামের রাউজানে আবারও প্রকাশ্যে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার গাজীপাড়ায় বাজারের একটি দোকানের সামনে মুহাম্মদ ইব্রাহিম (৩০) নামের এক যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিনটি অটোরিকশায় করে আসা ১০-১২ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ইব্রাহিমের মাথা ও বুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

নিহত ইব্রাহিম পূর্ব রাউজানের আদর্শ গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা এবং বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার অনুসারী ছিলেন। তার দুইটি ছোট সন্তান রয়েছে। হামলার সময় ইব্রাহিমের বাবা মুহাম্মদ আলম ও চাচা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিমকে লক্ষ্য করেও গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। গুলি তাদের গায়ে না লাগলেও পালাতে গিয়ে তারা আহত হন।

ঘটনার পর হামলাকারীরা কদলপুর ইউনিয়নের তালুকদার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় বাড়ির একজন সিএনজি চালক মো. নাঈমকে পায়ে ও হাঁটুতে গুলি করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের মাত্র তিন দিন আগেই, গত শনিবার দিবাগত রাতে রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের গরিব উল্লাহ পাড়ায় একই ধরনের কায়দায় গুলি করে হত্যা করা হয় যুবদল কর্মী মুহাম্মদ মানিক আবদুল্লাহকে (৩৬)। তিনিও বিএনপির একই কেন্দ্রীয় নেতার অনুসারী ছিলেন।

মাত্র ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে একই উপজেলার দুই যুবদল কর্মীকে এভাবে হত্যা করা হলো, যা পুরো রাউজানে চরম আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী বলছেন, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে এবং তারা এখন জীবন নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।

স্থানীয়দের দাবি, হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা র‌্যাব, পুলিশ ও প্রশাসনের যৌথবাহিনীর দ্রুত ও জোরালো অভিযান চালানোর জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ইব্রাহিমের মাথা ও বুকে গুলি লেগেছে এবং ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুইটি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কোনো সংযোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্তে তদন্ত চলছে।