আজ , বুধবার, ২১ মে ২০২৫

রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৩, দুইজন আশঙ্কাজনক

লেখক : সাহেদুর রহমান মোরশেদ | প্রকাশ: ২০২৫-০৩-২০ ০১:৩১:২১

রাউজানবার্তা প্রতিবেদকঃ

চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশায় আগুন দেওয়া হয়। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত রাউজান উপজেলার নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের অদুদ চৌধুরী ঈদগাহ মাঠ, ইউসুফ দিঘি পাড় ও গহিরা চৌমুহনী এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের কারণ ও পরিস্থিতিঃ

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকেলে নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের অদুদ চৌধুরী ঈদগাহ মাঠে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীরা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। বিকেল পাঁচটার দিকে মাহফিল শুরু হলে মোটরসাইকেলে করে অপর পক্ষের ২০-২২ জন এসে ইফতার অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সংঘর্ষ শুরু হয়।

একপর্যায়ে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে, সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে গোলাম আকবরের অনুসারী মুহাম্মদ সেকান্দর (২৮), অর্জুন কুমার নাথ (৪৭) এবং গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী মুহাম্মদ মোরশেদ আলম (৪০) ও মুহাম্মদ বাদশা রয়েছেন। আরও ১০ জন আহত হলেও তাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

দফায় দফায় সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগঃ

সংঘর্ষের পর গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীরা পাশের মসজিদে গিয়ে ইফতার সারেন। তবে সন্ধ্যার পর ইউসুফের দিঘি এলাকায় আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় পাঁচটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী রাউজান উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, “ইফতার মাহফিল চলার সময় মোটরসাইকেলে এসে ২০-২২ জন আমাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়।” তিনি দাবি করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছেন।

অন্যদিকে, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আবু জাফর চৌধুরী অভিযোগ করেন, “আমাদের কর্মীরা পাশের ইউনিয়নের চিকদাইরে দলীয় ইফতার মাহফিলে যাচ্ছিলেন। তখন গোলাম আকবরের লোকজন তাদের মারধর করেন এবং পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন। সন্ধ্যায় আমাদের কর্মীদের ওপর ফের হামলা হয়, এতে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।”

পুলিশের বক্তব্যঃ

রাউজান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রশিদ জানান, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিস্তারিত তদন্তের পর জানা যাবে।”

সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।