রাউজানে স্বামী পরিত্যক্ত মহিলার পৈতৃক ভিটায় তার প্রাপ্য অংশে ঘর নির্মান করেও বসবাস করতে পারছেনা

 

শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ

রাউজানে স্বামী পরিত্যক্ত মহিলা সাজেদ বেগম তার পৈতৃক বসতভিটায় তার প্রাপ্য অংশে ঘর নির্মান করে ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস করতে পারছেনা। ছেলে সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করছে।

রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ছত্র পাড়া এলাকার মৃত ছালেহ আহম্মদের কন্যা সাজেদা বেগমকে কক্সবাজার এলাকার দিনমজুর নুর মোহাম্মদের সাথে বিয়ে দেয় তার স্বজনেরা। বিয়ের পর সাজেদা বেগমের এক ছেলে সন্তান জম্মলাভ করেন। সাজেদা বেগম এর ছেলে সন্তান তৌহিদ (২৪) বর্তমানে রাউজান দারুল ইসলাম কামিল মার্দ্রাসায় আলিম ক্লাশের ছাত্র্। সাজেদা বেগমের বিয়ের পর সাজেদা বেগম ও তার ছেলে সন্তানকে ফেলে সাজেদার স্বামী নুর মোহাম্মদ উধাও হয়ে যায়।

বিয়ের পর এক ছেলে সন্তান সহ সাজেদা বেগমকে ফেলে তার স্বামী নুর মোহাম্মদ উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকে সাজেদা বেগম তার ছেলে সন্তানকে নিয়ে তার বাপের বসতভিটায় বসবাস করেন। সাজেদা বেগম সেলাই কাজ করে এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে গৃহপরিচালিকার কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করে আসছে। সেলাই কাজ করে এলাকার মানুষের ঘরে গৃহপরিচারিকার কাজ করে একমাত্র ছেলে সন্তান তৌহিদকে লেখাপড়া করাচ্ছেন সাজেদা বেগম।

সাজেদা বেগমকে তার পৈতৃক বসতভিটার প্রাপ্য অংশ ভাগ না দিয়ে তাকে পৈতৃক বসতভিটা থেকে তাড়িয়ে দেয় তার ভাই জমির উদ্দিন। সাজেদা বেগম তার পৈতৃক বসতভিটার প্রাপ্য অংশ পাওয়ার জন্য রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর আজাদ হোসেন সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে আবেদন করে। রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর আজাদ হোসেন সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা সালিসি বেঠক করে সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করে ৭৫ ফুট দৈর্ঘ ১৬ ফুট প্রশস্ত সাজেদা বেগমকে তার পৈতৃক বসতভিটায় তার প্রাপ্য অংশ দেয়।

সাজেদা বেগমকে ভাগ করে দেওয়া তার পৈতৃক অংশ সাজেদা বেগমের ভাই মোঃ শফি ও কামাল উদ্দিন মেনে নিলে ও অপর ভাই জমির উদ্দিন মেনে না নিয়ে সাজেদা বেগমের ঘর নির্মান কাজে বাধা দেয়। সাজেদা বেগম ও তার দুই ভাই শফি ও কামাল উদ্দিনকে প্রতিবেশী দিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানী করছে।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আজাদ হোসেন সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তায় সাজেদ বেগম তার পৈতৃক অংশে টিনের ছাউনি দিয়ে টিনের বেড়া দিয়ে একটি ঘর নির্মান করে। ঘর নির্মান করার পর সাজেদা বেগমের ঘরে নির্মান করা ঘরের মধ্যে জমির উদ্দিনের শৌচাগারের সেফটি ট্যাংক সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হলে ও জমির উদ্দিন শৌচাগারের ট্যাংক সরিয়ে নেয়নি।

সাজেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমি সেলাই কাজ করে এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আমার ছেলে সন্তানকে লেখাপড়া খরচ ও জিবিকা নির্বাহ করছি। আমার পৈতৃক বসতভিটার প্রাপ্য অংশে আমি ঘর নির্মান করার পর ও আমার ভাই জমির উদ্দিনের বাধার কারনে আমি আমার ছেলে সন্তানকে নিয়ে ঘরে বসবাস করতে পারছিনা। আমার ভাই জমির উদ্দিন আমার মার্দ্রাসায় অধ্যায়নরত সন্তান তৌহিদকে প্রতিবেশীদের দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে।

এ ব্যাপারে জমির উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে, জমির উদ্দিন বলেন, সাজেদা বেগমের অভিযোগ মিথ্যা, তার প্রাপ্র অংশ তাকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তার অংশে ঘর নির্মান করা হয়েছে। ঘর নির্মান করার পর ও ভাড়া বাসায় থাকছে সাজেদা বেগম।

রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদ হোসেন বলেন, স্বামী পরিত্যক্ত মহিলা সাজেদা বেগমকে তার ছেলে সন্তান তৌহিদকে নিয়ে বসবাস করার জন্য তার পৈতৃক বসতভিটার ভাগ তাকে দেওয়া হয়েছে । সাজেদা বেগমের সাথে তার ভাই জমির উদ্দিনের বিরোধ থাকায় দুইজনের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদ রয়েছে।