বাস পোড়ানোর প্রতিবাদে ৪ দফা দাবীতে বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘন্টা পরিবহন ধর্মঘট

শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
এবার ৪ দফা দাবীতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার সকল রুটে ৪৮ ঘন্টার পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

২৭ এপ্রিল শনিবার বৃহত্তর চট্টগ্রাম বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সভা করে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। ২৮ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম কক্সবাজার সড়ক, চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়ক, চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়ক, চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়ক,বান্দরবান জেলার সকল সড়কে এই ধর্মঘট পালিত হবে বলে জানান,বৃহত্তর চট্টগ্রাম বাস মালিক, শ্রমিক ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তা চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মোটর মালিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ হোসেন কোম্পানী।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম বাস মালিক, শ্রমিক ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তা চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মোটর মালিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ হোসেন কোম্পানী আরো বলেন, ৪ দফা দাবীতে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘটে সাড়া দিয়ে কর্মবিরতি পালন করবেন।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম বাস মালিক, শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৪ দফা দাবীর মধ্যে রয়েছে, যখন তখন বাস মালিক ও কর্মচারী গ্রেফতার করা যাবে না এবং বাস মালিক ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে সড়ক দুর্ঘটনা কে কেন্দ্র করে বাস পোড়ানো ও বাস চলাচলে বাধাদান কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।সড়ক দুর্ঘটনায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। সড়ক মহাসড়কে চলাচলরত অনুমোদনহীন অযাচিত বাস চলাচল বন্ধ করতে হবে।

উল্লোখ্য,গত ২২এপ্রিল সোমবার বিকালে চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী মোটর সাইকেল নিয়ে রাঙ্গুনিয়া এলাকায় ঘুরতে গেলে শাহ আমানত নামের একটি যাত্রীবাহি বাসের ধাক্কায় চুয়েটের শিক্ষার্থী শান্ত ও তৌফক মারা যায়। হিমু নামে এক চুয়েট শিক্ষার্র্থী মারাত্বকভাবে আহত হয়।

এইঘটনাকে কেন্দ্র করে চুয়েটের শিক্ষার্থীরা চুয়েট গেইটে চট্টগ্রাম কাপ্তাই মহাসড়কে গাছেরগুড়ি ফেলে টায়ার জালিয়ে দিযে সড়ক অবরোধ করে। শিক্ষার্থীরা শাহ আমানত বাস সাভির্সের ৩টি বাস আটক করে। ঘটনার দিন একটি বাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। গত ২২ এপ্রিল সোমবার থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত চারদিন ধরে চুয়েটের শিক্ষার্থীরা ৯দফা দাবীতে সড়ক অবরোধ কর্মসুচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঘাতক বাস চালক তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার, ও দাবীসমুহ মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে ও চুয়েটের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অটল থাকেন।

সর্বশেষ গত ২৫এপ্রিল বিকালে চুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিল সভা ডেকে চুয়েট অনিদিষ্টকালের জন্য বন্দ্ব ঘোষনা ও ছাত্র- ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। চুয়েটের একাডেমিক কাউন্সিলের সভার সিদ্বান্ত শুনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরো উত্তোজিত হয়ে উঠে। আটকে থাকা শাহ আমানত নামের আরো দুটি বাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।

২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে চুয়েট প্রশাসন তাদের দেওয়া ঘোষনা থেকে সরে এসে চুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ৯ মে পর্যন্ত বন্দ্ব ও হল খোলা রাখার সিদ্বান্ত নেয়।

প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে জনজীবন অতিষ্ট হলেও চুয়েটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্দ্ব থাকায় সাধারন মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম বাস মালিক, শ্রমিক ঐক্য পরিষদের বৃহত্তর চট্টগ্রামের সকল সড়কে ৪৮ ঘন্টা ধর্মঘট হলে হাজার হাজার মানুষ আবারো চরম দুর্ভোগে পড়বে ।