রাউজান উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীর ছড়াছড়ি

শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
রাউজান উপজেলা নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেসানুল হায়দার বাবুলের বিরুদ্ধে লড়বেন একাধিক প্রার্থী। নৌকা প্রতিক তুলে নেওয়ার সংবাদে আওয়ামী লীগের একাধিক উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেল ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে।

চায়ের দোকান, হাট বাজার, অলি গলি ও অফিস আদালতে, সাধারন মানুষের মধ্যে চলছে ব্যাপক গুঞ্জন। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এহেসানুল হায়দার বাবুল একাধারে রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে ও এবারের নির্বাচনে আবারো প্রার্থী হবেন বলে জানান।

এহেসানুল হায়দার বাবুলের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেসানুল হায়দার বাবুল আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিদন্দ্বির সাথে ভোট যুদ্ধে অর্বতিন হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সম্ভ্রাব্য প্রার্থীদের যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন, বতর্মান উপজেলা চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এহেসানুল হায়দার বাবুল, রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহি সদস্য চট্টগ্রাম জেলা পুজাঁ উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক শ্যামল পালিত, প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা বিনাজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম ফজল হক সওদাগরের পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াসিন চৌধুরী, রাউজান পৌরসভার প্যনেল মেয়র বশির উদ্দিন খান, রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শাহজাহান ইকবাল, ইরফান আহম্মদ চৌধুরী, কামরুল হাসান বাহাদুর, স্বপন দাশ গুপ্ত, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আকবর,

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ নেতা রাউজান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আনোয়ারুল আজিম চৌধুরীর কনিষ্ট পুত্র ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন সামি, বিনাজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুকুমার বড়ুয়া, এডভোকেট অসিম দাশ গুপ্ত, আওয়ামী লীগ নেতা জবরুত খান চৌধুরী,

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়্রাম্যান পদে মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী রুবিনা ইয়াসমিন রুজি, মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী শামিমা আকতার, লাকি চৌধুরী। আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভ্রাব্য চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী এলাকায় আগাম চষে বেড়াচ্ছেন।

রাউজান উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির শাসন আমলে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পটিয়া পাড়া এলাকার মরহুম শোকর আলী কোম্পানীর পুত্র ভালিকা উলেন মিলের জেনারেল ম্যানেজার এম আবদুল্লাহ। পরবর্তী এরশাদ সরকারের শাসন আমলে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় রাউজান পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের হাজী পাড়া এলাকার মরহুম বদিউর রহমান সওদাগরের পুত্র মরহুম অধ্যাপক লোকমান হাকিম। পরবর্তী গত ২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেসানুল হায়দার বাবুল রাউজান উন্নয়ন পর্ষদ এর প্রার্থী হয়ে মাছ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বি প্রার্থী মেজর অবঃ জামশেদ কে পরাজিত করে এহেসানুল হায়দার বাবুল উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।

পরবর্তী ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে এহেসানুল হায়দার বাবুল উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। ২০১৮ সালের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে এহেসানুল হায়দার বাবুল বিনা প্রতিদন্দিতায় রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।

এবারের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে এহেসানুল হায়দার বাবুলের সাথে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতা করার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তিনবারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান দলীয় প্রতিক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করলে ও এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতিক নৌকা দেবেনা বলে দলীয় ভাবে সিদ্বান্ত নেওয়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান এহেসানুল হায়দার বাবুলের বিরুদ্বে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী প্রতিদন্দ্বিতায় নামার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেসানুল হায়দার বাবুলের কাছে ফোন করে জানতে চাইলে, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহেসানুল হায়দার বাবুল বলেন, রাউজানবাসী আামাকে পর পর তিনবার ভোট দিয়ে রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। আগামী নির্বাচনে ও আমি প্রার্থী হওয়ার আশা করছি। রাউজানের সংসদ সদস্য এবি এম ফজলে করিম চৌধুরীর পরামর্শে নির্বাচন করবো।

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে আরো প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে এহেসানুল হায়দার বাবুল আরো বলেন, জনগন ভোট দিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে। জনগন যাকে যোগ্য মনে করবে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।

রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব শাহাজাহান ইকবাল বলেন, রাউজানের অভিভাবক সংসদ সদস্য এবি এম ফজলে করিম চৌধুরী যদি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবো।

রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাহাবুউদ্দিন আরিফের সহধর্মীনি মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শামিমা আকতার বলেন, আমার ভাই গিয়াস উদ্দিন জামিল ছাত্রলীগৈর রাজনীতি করতে গিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির লালিত সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয় । আমার স্বামী ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কারনে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আমি আগামী নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার আশা করছি।

রাউজানের ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার ৩ লাখ ১৫ হাজার ৫শত ৬২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আগামী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন ।