রাউজানে ব্যঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ডায়গনেষ্টিক সেন্টার ও ল্যাব

শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার জলিল নগর বাস ষ্টেশন, মুন্সির ঘাটা, হলদিয়া আমির হাট, গহিরা চৌমুহনী, রাউজান ফকির হাট বাজার, নোয়জিশপুর নতুন হাট, কাগতিয়া হাট, রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে, কদলপু আশরফ আলী চৌধুরূ হাট, পাহাড়তলী চৌমুহনী, নোয়াপাড়া পথেরহাট বাজার মগদাই পিকে সেন হাট এলাকা সমুহে ব্যঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছৈ ডায়গনেষ্টিক সেন্টার, ল্যাব।

এসব ডায়গনেষ্টিক সেন্টারের মধ্যে অধিকাংশ ল্যাব ডায়গনেষ্টিক সেন্টারের বৈধ কোন কাগজ পত্র নেই। রাউজানের বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিভিন্ন প্রকার রোগে আক্রান্ত হয়ে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ল্যাব ও ডায়গনেষ্টিক সেন্টারে আসা চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসার জন্য গেলে চিকিৎসকরা রোগ আক্রান্ত রোগীদেরকে বিভিন্ন ধরনের পরিক্ষার নামে ঐসব ল্যাব ও ডায়গনেষ্টিক সেন্টারে পাঠানো হয়। ল্যাব ও ডায়গনেষ্টিক সেন্টারে পরিক্ষার নামে আদায় করেন টাকা। পরিক্ষা শেষে রোগীরা চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরিক্ষার রিপোর্ট দেখানোর পর তাদের চিকিৎসা করে চিকিৎসকরা।

অনেক ল্যাব ও ডায়গনেষ্টিক সেন্টারে অনেক সময়ে ভুল রিপোর্ট দেওয়ায়, ভুল রির্পোটের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসকেরা চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় অনেক রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অনেক রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় পরিক্ষা করে ভুল রিপোর্টধরা পড়ার পর নতুন ভাবে চিকিৎসা করে অনেক টাকা খরচ করে আরোগ্য লাভ করেন।

রাউজান উপজেলার ৭নং রাউজান ইউনিয়নের হরিশখান পাড়া এলাকার আজিজুল হক কোম্পানীর বাড়ীর বাসিন্দ্বা জলিল নগর বাস ষ্টেশনের চায়ের দোকানের মালিক আকতার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তার স্ত্রী জাহানারা বেগমের জ্বর হয়। জ্বর হলে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করার জন্য যায়। জাহানারা বেগমকে চিকিৎসা করে তার রক্ত পরিক্ষা করার জন্য রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে স্টার ল্যাব ড্য়াগনেষ্টিক সেন্টারে পাঠানো হয়। স্টার ল্যব ডায়গনেষ্টিক সেন্টার পরিক্ষা করে জাহানারা বেগমের টাইফেড হয়েছে মর্মে রিপোর্ট দেয়।

স্টার ল্যাব ডায়গনেষ্টিক সেন্টারের দেওয়া রিপোর্ট অনুসারে জাহানারা বেগমকে চিকিৎসা করার পর ও সুস্থ না হওয়ায় জাহানারা বেগমকে চট্টগ্রাম নগীরর একটি বেসকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। বেসরকারী হাসপাতালে পুনরায় পরিক্ষা করে জাহানারা বেগমের কোন টাইফয়েড রোগ হয়নি বলে রির্পোট দেয়। আকতার হোসেন আরো বলেন, ভুল রিপোর্ট দেওয়ায় আমার স্ত্রী জাহানারা বেগমকে আমি এক লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করে সুস্থ করে এনেছি।

রাউজানে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা ডায়গনেষ্টিক সেন্টার ও ল্যাব এর বিষয়ে রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগজ্যাই মারমার কাছে জানতে চাইলে, উনি ঐ বিষয়ে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছ থেকে জানতে পরমর্শ দেন।

রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন ধর জানান, গত ১৭জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠা সব ধরনের অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকের তালিকা চেয়েছেন। অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মালিকরা নিজেরাই বন্ধ করে দিলে ভালো, না হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব এই কথাও বলেন মন্ত্রী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমন নির্দেশনা দেয়ার কারণে এই অভিযান পরিচালনা করে গত ২১ জানুয়ারী রবিবার বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সদরের পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বন্দ্ব করার নির্দেশ দেওয়া ডায়গনেষ্টিক সেন্টার ও ল্যাব গুলো হলো রাউজান জলিল নগর বাস ষ্টেশনের রাউজান ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ,স্টার ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রাউজান ফকির হাট বাজারের মেডিকো ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রাউজানের মুন্সির ঘাটার লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রাউজান জলিল নগর বাস ষ্টেশনের ইনটেনসিভ ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

অভিযান চলাকালে এসব প্রতিষ্ঠান বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না র্ব্যথ হওয়ায় এবং নানাবিধ অনিয়মের কারণে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।