শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার গহিরাবক্সে আলী চৌধুরীর বাড়ীর বাসিন্দ্বা পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পীকার ও শিক্ষা মন্ত্রী অস্থায়ী রাস্ট্রপতির দায়িত্বপালন কারী মরহুম একে এম ফজলুল কাদের চৌধুরীর প্রথম সন্তান সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এই রাজনৈতিক বনেদি পরিবারে ১৯৪৯ সালের ১৩মার্চ জম্মগ্রহন করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পর মরহুম একে এম ফজলুল কাদের চৌধুরী ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৯৭৩ সালের ১৮ জুলাই রহসজনক ভাবে মৃত্যু বরন করেন। একই কারাগারে ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর মামলার রায়ে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে (আওয়ামী লীগ সরকারের জুডিশিয়াল হত্যার স্বীকার) মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার মাধমে মারা যায় দেশের জনপ্রিয় এই রাজনৈতিক নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর লাশ ঢাকা থেকে রাউজানের গহিরা বাড়ীতে নিয়ে আসার সংবাদ পেয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঐদিন লাখ লাখ মানুষ ছুটে আসেন রাউজানের গহিরায়। তৎকালীন আওয়ামী লীগরকারের কাঠের বাধা নিষেধের ফলে ছুঠে আসা লাখ লাখ মানুষ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর জানাজার নামাজে অংশ গ্রহনকরতে পারেনি। গহিরার বাড়ীতে আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারীর মাধ্যমে ছোট পরিসরে জানাজার নামাজ আদায় করে বাড়ীর কবরস্থাানে তার লাশ দাফন করা হয় ।
আওয়ামী লীগ সরকারের জুডিশিয়াল হত্যার স্বীকার ৬বারের নির্বাচিত সাবেক এমপি মরহুম জননেতা শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী’র ৯ম শাহাদত বার্ষিকী পালিত হয়েছে রাউজানে।
শুক্রবার(২২ নভেম্বর) গহিরা বক্সআলী চৌধুরীর বাড়িতে নানা কর্মসুচির মধ্যেদিয়ে প্রথম বারে ৯ম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়।কর্মসুচিতে ছিল সকালে খতমে কুরআন,দোয়া মাহফিল, কবর জিয়ারত ও মেজবানের আয়োজন। পরিবার পক্ষে মরহুমের কবর জিয়ারত ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মরহুমের পুত্র কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য হুম্মান কাদের চৌধুরী, ফজলুল কাদের চৌধুরী, সামির কাদের চৌধুরী, সাকিব কাদের চৌধুরী।
মরহুমের জিয়াফত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী, বিএনপি নেতা মীর হেলাল উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা, ভূমি রিদুয়ানুল ইসলাম, বিএনপি নেতা নুরুল হুদা, ফিরোজ আহম্মেদ, আবু জাফর চৌধুরী, সৈয়দ মঞ্জু, রেজাউল রহিম আজম, সাবের সুলতান কাজল, মোজাম্মেল হক, কাজী জসিম, ইকবাল চৌধুরী, মহিউদ্দিন জীবন, মোঃ মাসুদ আলম, আলী সুমনসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
মিলাদ কিয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে মরহুম শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এছাড়াও রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলার বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মরহুমের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
উলেখ্য, মরহুম সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম ৬ রাউজান, চট্টগ্রাম ৭ রাউজান আসন থেকে মুসলিম লীগেরপ্রার্থী হয়ে দুটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। পরবর্তী এরশাদ সরকারের শাসন আমলে ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ৬ রাউজান আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে এন,ডি,পির প্রার্থী হয়ে চট্টগ্রাম-৬ রাউজান আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনেচট্টগ্রাম ৭ রাঙ্গুনিয়া আসন থেকে সংসদ সদস্য নিবাচিত হয় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।পরবর্তী ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ৭রাঙ্গুনিয়া আসন থেকে সংসদ নিবাচিত হয়। ২০০৯ সালের সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ৭ রাঙ্গুনিয়া আসন ও চট্টগ্রাম২ ফটিকছড়ি আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়ে প্রতিদন্দিতা করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়া আসন থেকে পরাজিত হলে ও ফটিকছড়ি আসনথেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এরশাদ সরকারের শাসন আমলে স্বাস্থ্য মন্ত্রী, ত্রাণ ও পুনঃবাসন মন্ত্রী, গৃহায়ন ও গণর্পুত মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপি সরকারের শাসন আমলে প্রধান মন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।