শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে । রাউজান হাটহাজারীর ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করেন।
৭ মে মঙ্গলবার ভোর ৬ টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত সময়ে নদীতে ভাটার সময়ে রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের খলিফার ঘোনা, উরকিরচর, পশ্চিম আবুর খীল, নাপিতের ঘাট, মইশকরম হাটহাজারীর মদুনাঘাট, চ্ইালতা খালী, বাড়ীঘোনা, আমতোয়া, মাছুয়াঘোনা, পোড়ালীর মুখ এলাকায় মা মাছ হালদা নদীতে ডিম ছাড়ে।
ঐ সময়ে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে নৌকা ও জাল দিয়ে ডিম সংগ্রহ করেন। সকালে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার সংবাদ পেয়ে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত সময়ে হালদা নদীতে ভাটা শেষে জেয়ার আসলে জোয়ারের সময়ে ডিম সংগ্রহকারীরা রাউজানের আবুর খীল, নাপিতের ঘাট, খলিফার ঘোনা, উরকিরচর,মগদাই, আজিমের ঘাট, কাসেম নগর, কাগতিয়া, পশ্চিম বিনাজুরী, দক্ষিন গহিরা, পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা , পশ্চিম গহিরা ও হাটহাজারীর মদুনাঘাট, খলিফারঘোনা, মাছুয়াঘোনা, দক্ষিন মার্দ্রাসা, আমতোয়া পুর্বগড়দুয়ারা, গড়দুয়ারা এলাকায় নৌকাও জাল নিয়ে হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
পুর্ব গড়দুয়ারা এলাকার ডিম সংগ্রহকারী আবুতাহের বলেন, ভোরে ভাটার সময়ে নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে তা আমরা জানিনা। ভাটার সময়ে হালদা নদীর নিচু এলাকায় ডিম সংগ্রহকারীরা নদী থেকে ডিম সঙগ্রহ করেন। কালবৈশাখীর তান্ডবে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় মোবাইল ফোন বন্দ্ব থাকায় ভাটার সময়ে নদীতে ডিম ছাড়ার সংবাদ পায়নি।
সকাল ১০ টার সময়ে নদীতে ডিম ছাড়ার সংবাদ পেয়ে হালদা নদীর উচু এলাকার ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে নদীতে জাল বসিয়ে ডিম সংগ্রহ করার জন্য যায়। দুপুরের সময়ে নদীতে ভরা জোয়ারের সময়ে হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করতে থাকি। দুপুরে জেয়ারের সময়ে হালদা নদী থেকে দুটি নৌকা নিয়ে চার জন মিলে ৩ কেজি ডিম সংগ্রহ করেন বলে জানান, গহিরা মোবারক খীল এলাকার ডিম সংগ্রহকারী শাহ আলম।
হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে ৭ মে মঙ্গলবার ভোরে ভাটার সময়ে দুপুরে জেয়ারের সময়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে। অনেকেই এই ডিম নমুনা ছেড়েছে বলে দাবী করেন। ভোরে ভাটার সময়ে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার সময়ে বেশীর ভাগ ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করতে পারেনি । ভাটার সময়ে মা মাছ ডিম ছাড়ার পর অনেক ডিম ভাটার শ্রোতের পানিতে ভেসে কর্ণফুলী নদী হয়ে সাগরে চলে যায় বলে ধারনা করছেন হালদা পাড়ের বাসিন্দ্বারা।
হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করে ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ফুটিয়ে ডিম থেকে রেনু উৎপাদনের জন্য রাউজানের গহিরা মোবারক খীল, পশ্চিম বিনাজুরী আই, ডি, এফ এর হ্যচারী, হাটহাজারীর মদুনাঘাট, মাছুয়া ঘোনা, দক্ষিন মার্দ্রাসা এলাকার হ্যচারী ও হালদা নদীর তীরে খনন করা মাটির কুয়াগুলো প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে বলে জানান রাউজান উপজেলা মৎস সম্প্রসারন কর্মকর্তা আবদুল্ল্যাহ আল মামুন।
রাউজান উপজেলা মৎস সম্প্রসারন কর্মকর্তা আবদুল্ল্যাহ আল মামুন আরো বলেন, হালদা নদীতে ভোরে মা মাছনমুনা ডিম ছেড়েছে। দুপুরে ভরা জোয়ারের সময়ে হালদা নদীর রাউজান হাটহাজারীর বিভিন্ন স্পটে ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করছেন। কি পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ করার কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। ডিম সংগ্রহ করে ফিরে আসলে তা জানা যাবে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস অফিসারকে ফোন করে জানতে চাইলে, জেলা মৎস অফিসার শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, হালদা নদীতে মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। আবারো প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাত হলে হালদা নদীতে পুরোদমে মা মাছ ডিম ছাড়বে বলে আশা করছি।
হালদা গবেষক চট্টগ্রাম ক্যান্টেমেন্ট পাবলিক কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ৭ মে মঙ্গলবার সকাল ৬ টার সময় ভাঁটার শেষে দিকে হালদা নদীর রাউজান অংশের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালিতে ডিম সংগ্রহকারী পাকিরাম দাশ, হরিরন্জন দাশ, সন্তোষ দাশ, সুজিত দাশ এবং সুনিলদাশ ১১ টি নৌকার মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করেন। প্রতিটি নৌকায় গড়ে ২ থেকে ২.৫ বালতি করে ডিম সংগ্রহ করেন।
উল্লেখ্য ৬ মে থেকে ১০ মে পর্ষন্ত হালদায় কার্পজাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার অমাবস্যার জোঁ চলছে। হালদা নদীতে আমবস্যার জোঁ”তে পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভবনা রয়েছে ।