শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
চট্টগ্রামের রাউজানের স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও সাবেক ইউপির দুই চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ও সাহাবুদ্দিন আরিফের বিরুদ্ধে হামলা, আধাপাকা একটি ঘর ভাংচুর করে গুড়িয়ে দেওয়া, ৪০ শতক জমি দখল, দফায় দফায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেয়া এবং সড়ক কেটে পুকুর বানানোর অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক প্রবাসী ব্যবসায়ী৷
৬ অক্টোবর রোববার দুপুরে উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ইসলামবাদ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমিন হাবিলদারের নতুন বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী ব্যবসায়ী আলহাজ মুহাম্মদ জানে আলম।
সংবাদ সম্মেলেনে জানে আলম বলেন, গত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে আমার ভাই এবং পরিবারের সদস্যদের একাধিকবার কোপানো এবং বাড়ির সামনের ৫০ বছরের পূরণো সড়ক কেটে আমাদের ৪০ শতক জমি দখলের অভিযোগ দিতে সাবেক সংসদ ফজলে করিমের কাছে গেলে তাঁর বাসায় ঢুকতে আমাকে তাঁর দেহরক্ষী ম্যালকম চক্রবর্ত্তীকে দিতে হয় দেড় লাখ টাকা। তাঁর আরেক অনুসারী আওয়ামীলীগের উপজেলা সহসভাপতি ইরফান আহমদকে দিতে হয় ২ লাখ টাকা চাঁদা।
পরে ফজলে করিমের সাথে তাঁর বাসায় দেখা করার সুযোগ পান তিনি। এরপর ফজকে করিমে তাঁকে সমস্যার সমাধান না দিয়ে তাঁর বাবার কেনা জনি তাঁর কাছে বিক্রি করার প্রস্তাব দেন উল্টো। পরে তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে প্রশাসন স্থানীয় ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফ ও নুরুল আমিনকে লেলিয়ে দিয়ে নানা ভাবে হামলা, মামলা এবং সন্ত্রাসীদের দিয়ে পুলিশের উস্থিতিতে বাড়ি ভাংচুর করে লুট করে এলাকা ছাড়া করেন।
সেই সুযোগে পাশ্বর্বতি বাসিন্দা নুরুল আমিন জোর পূর্বক ১০০ এর বেশী গাছ কেটে নেয়া, ৫০ বছরের পূরণো সড়ক কেটে পুকুর খনন ও দখলে নেন ৪০ শতক জমি। বাঁধা দিলে করা হয় হামলা।
সংবাদ সম্মেলনে জানে আলম অভিযোগ করেন, নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে যাতায়াত ছিলো ফজলে করিম ও তাঁর ছেলে ফারাজ করিমের। একারণে তাঁর উপর এবং তাঁদের জায়গা জমি দখলে নিতে জোর খাটাতেন নুরুল আমিন ও তাঁর ছেলেরা।
তিনি বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিনকে বিচার দিতে গেলে তিনিও ২ লাখ টাকা চাঁদা নেন। এক পর্যায়ে সমস্যার সমাধান করে দিবে বলে তিনভরি একটি সোনার চেইনও হাতিয়ে নেয় সাহাবুদ্দিন। কিন্তু ফজলে করিমের নির্দেশে সাহাবউদ্দিন তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দখলকারী নুরুল আমিনের পক্ষ নেন।
এভাবে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তিনি বিচার চেয়ে বার বার প্রতারণা এবং উল্টো হয়রানীর শিকার হন। জানে আলম দাবী করেন, তাঁর বাড়ির সামনে ৪০ শতক জমি ও পুকুরের অংশ ফজলে করিমের প্রভাব খাটিয়ে দখল করে নেন নুরুল আমিন চেয়ারম্যান৷
এজমি দখল করতে তাঁর ১০০ টি বেশী ফলজ বনজ গাছ সন্ত্রাসী এনে কেটে ফেলা হয়। ৫০ বছরের পূরণো সড়ক কেটে খনন করা হয় পুকুর। জানে আমল বলেন, গত আওয়ামী শ্বৈরচারী সরকারের আমলে তাঁরা থানা, আদালত এবং জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে বার বার ঘুরেও কোন সমাধান পাননি। এখন নতুন বৈষম্যবোরোধী আন্দোলনের পক্ষের সরকারের কাছে আশা করেন তিনি ন্যায় বিচার পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানে আলমের ভগ্নিপতি ব্যবসায়ী বদিউল আলম বলেন, তিনি নিজের হাতে সাবেক চেয়ারম্যান সহাবুদ্দিনের হাতে ২ লাখ টাকা দাবী করা চাঁদার টাকা দিয়ে আসেন। তারপরও তাঁকে একাধিক মিথ্যা মামলায় আসামী করেন নুরুল আমিন চেয়ারম্যান।
জানে আলমের ভাই জাহেদুল আলম বলেন, আমাদের বাড়িতে দাঁড়াতেই দেয়নি। বাড়িতে আসলেই সন্ত্রাসী এনে হামলা করে পেটানো হতো। তাঁকে একাধিকবার হামলা করে তাঁর মাথায় কোপানো হয়েছে। তাঁদের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলমকেও একইভাবে কোপানো হয়। পরিবারের তিনজন নারী সদস্য সহ নির্মাণ শ্রমিক কাজ করা ৫ থেকে জনকে কোপানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এলাকার অন্যান্য বক্তিবর্গ এবং পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।