শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ্ মাইজভান্ডারী (ক.)’র ১১৯তম ‘মহান ১০ মাঘ উরস শরিফ’ উপলক্ষে মাইজভান্ডারী শরীফ ‘দরবার-ই গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী’র গাউসিয়া হক মঞ্জিল-এর ব্যবস্থাপনায় ‘মাইজভান্ডারী শরিফ শাহী ময়দান’-এ ষষ্ঠ “তাযকেরা-এ-চেরাগে উম্মতে আহমদী (দঃ) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত মাহফিলের সভাপতিত্ব করেন, মাইজভান্ডার শরিফ দরবারে গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক মঞ্জিল’র সাজ্জাদানশীন ও ‘শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভা-ারী (ক.) ট্রাস্টের ম্যানেজিং ট্রাস্টি শাহ্ সুফি সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভান্ডারী (মা.জি.আ.)।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভান্ডারী (মা.জি.আ.) বলেন,প্রিয় নবী (সা:) এর মুল কাজ কেবল ধন বন্টন ছিলো তা ভাবলে ভুল হবে, উনার মুল কাজ ছিলো আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর ইলম, হিকমত বন্টন করা, রহমত বন্টন করা, রুহানিয়ত বন্টন করা। আউলিয়ায়ে কেরাম গণও তাই করেছেন। যেমন, হযরত কেবলা আলম, বাবাজান কেবলা আলম, শাহানশাহ বাবাজান সারাটা জীবন দিয়ে আমাদের একটাই দর্শন প্র্যাকটিস করিয়েছেন, একটাই দর্শন ডেমনস্ট্রেট করিয়েছেন ,একটিই রুহানী শিক্ষা দিয়েছেন ,উৎসাহ উদ্দীপনা দান করেছেন, শিশুকে শিশুর মতো করে, মায়েদের মায়ের মতো করে, বাবাদের বাবার মতো করে, মুরব্বিদের মুরব্বির মতো করে শিক্ষা দিয়েছেন। রুহানিয়ত শিক্ষা দিয়েছেন এবং মেহেরবানী করেছেন। দুনিয়াবি কোন সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে কোন নিঃসন্তান সন্তান পেতে পারেন নাই, খোদায়ী এই রহমত তারা (আউলিয়ায়ে কেরাম গণ) বিতরণ করেছেন।
তারা দোয়া করেছেন, সেই দোয়া উধ্বজগতে কবুল হয়েছে, নিঃসন্তান সন্তানের অধিকারী হয়ে গেছে। এটি আউলিয়ায়ে কেরামের মূল অবদান। সেই বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দেয়া দরকার। হুজুর গাউসুল আজম মাইজভান্ডারী আমাদের সমাজের যে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন, প্রচার প্রসার করতে বলেছেন, উনি আমাদের কোন রঙে রাঙাতে চেয়েছেন সেটি বুঝার চেষ্টা করাই আমাদের প্রধান কাজ। সেটা আমরা নিজেরা বুঝার চেষ্টা করতে হবে এবং অপরকেও সেটি বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে। কারণ আউলিয়ায়ে কেরামগণ এর দর্শন এর বড় বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁরা চান হুববিয়ত এর স্বভাব ,হুববিয়ত এর বৈশিষ্ট্য আমরা আমাদের ভিতরে লালন করি, আদব-এহতেরাম এর বৈশিষ্ট্য আমাদের ভিতরে লালন করি, আমরা হুসনে আখলাক অর্জন করি। কারণ এগুলো অর্জন ছাড়া কেউ ইবাদত করলে তখন বিপদের সম্মুখীন হয়ে যাবে।
বেলায়তে মোতলাকা হল একটি ট্রান্সফরমেশন গাইড বুক উল্লেখ করে এটি অনুধাবন করার জন্য আমাদের দার্শনিক মন নিয়ে চিন্তা করতে হবে এবং তাহলেই আমরা ভুল বোঝাবুঝির নিরসন ঘটিয়ে নিজের জীবন ও সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন করতে পারব।
মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসা-এ-গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী মার্দ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবুল কাসেম।
‘মহান ১০ মাঘ উরস শরিফ’ উপলক্ষে ঝতঐগ ট্রাস্টের গৃহীত দশদিন ব্যাপী কর্মসূচি উপস্থাপন করেন উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বোয়ালখালী চরণদ্বীপ দরবারের নায়েবে মোন্তাজেম শাহাজাদা মাওলানা শেখ আবু মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ফারুকী, বোয়ালখালী গোমদ-ী দরবারের নায়েবে শাজ্জাদানশীন মাওলানা সৈয়দ আহমদুল হক মাইজভান্ডারী, মাদ্রাসা-এ-গাউসুল আযম মাইজভান্ডারী’র আরবি প্রভাষক মাওলানা মুহাম্মদ মুজিবুল হক মাইজভান্ডারী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাইজভান্ডার শাহী জামে মসজিদের সাবেক খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ফোরকানী ও বর্তমান খতিব মাওলানা মুহাম্মদ বশিরুল আলম মাইজভান্ডারী।
মাহফিলে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি রেজাউল আলী চৌধুরী জসিম, সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান বাবুল সহ অন্যান্য সদস্যগণ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার বিভিন্ন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ । মিলাদ-কিয়াম ও তাওয়াল্লোদে গাউসিয়া পরিচালনা করেন উম্মুল আশেকীন মুনাওয়ারা বেগম এতিমখানা ও হেফজখানার প্রধান হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আবুল কালাম।
সম্পাদক ও প্রকাশক: সাহেদুর রহমান মোরশেদ
মোবাইল: ০১৮১৮ ১১৭৪৭০, ইমেইল: raozan786@gmail.com
© raozanbarta24.com 2023. All Rights Reserved