শফিউল আলম, রাউজানবার্তাঃ
ব্যাপক হারে সারাদেশ ব্যাপী বৃক্ষ নিধন বন্ধ করতে সরকার নিজের বসতভিটায় রোপন করা ব্যক্তিগত গাছ কাটতে হলে অনুমতি নিতে হবে। এই নির্দেশ জারী করেছে সরকার। সরকারের নির্দেশনাকে অমান্য করে রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটা হচ্ছে ।
রাউজানের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিধন করা গাছ সাইজ করে করাতকল ও ইটের ভাটায় জ্বালানী কাঠ হিসাবে প্রতিনিয়ত ট্রাক, জীপ, টমটম ভর্তি করে বিক্রয় করা হচ্ছে অবৈধভাবে কাঠ ব্যবাসায়ীরা। রাউজানে ব্যাপক হারে গাছ কাটার ফলে বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়েছে এলাকা।
সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায় রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্ধা হায়দার, ওসমান, লোকমান, এয়াকুব, ফজল চার ভাই বেরুলিয়া খালের পাড়, পুকুরের পাড় থেকে বড় বড় ফুল গাছ, সেগুন, মেহগনী, আম গাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে রাউজান ফকির হগাটের এক কাঠ ব্যবসমায়ীর কাছে বিক্রয় করে দিয়েছে।
এব্যাপারে ফজলের কাছে জানতে চাইলে, ফজল বলেন, আমরা চারভাই মিলে আমাদের সম্পত্তি ভাগ করে নিয়েছি। ভাগ করা ফসলী জমির পাশে বেরুলিয়া খালের পাড়, পুকুর পাড় থেকে গাছ কেটে ৪লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রয় করেছি। গাছ কাটা ও ফসলী জমিতে মাটি ভরাট, পাকা সীমনা প্রাচীর নির্মান কাজের অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে ফজল বলেন, কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি ।
সরেজমিনে পরিদর্শন কালে র্উাজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের কলমপতি এলাকায় কলমপতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি পুকরের পাড় থেকে কোন অনুমতি না নিয়ে গাছ কেটে নিয়েছে কলমপতি এলাকার বাসিন্ধ মানিক। মানিকের কাছে জানতে চাইলে মানিক বলেন, কলমপতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পুকুরের অংশ আমি আনু মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করার জন্য বায়নানামা করি। বায়নানামা করার পর পুকুরের পাড়ে গাছ গুলো আমি রোপন করি। আমার রোপন করা গাছ আমি কেটেছি। কলমপতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের পুকুরের মুল মালিক হলেন কলমপতি এলাকার মহাজন বাড়ীর লোকজন। রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী জানে আলম ও তার সহযোগি সন্ত্রাসীদের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে মহাজন বাড়ীর কয়েকজন বাসিন্দ্বা নিজ বাড়ী ঘর ছেড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা ও ভারতে চলে যায়। পরবর্তী গত ২০০৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর Rab এর ক্রস ফায়ারে শীষ সন্ত্রাসী জানে আলম ও তার ৯ সহযোগি নিহত হয় । ঘরবাড়ী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরিবারের সদস্যরা আর এলাকায় ফিরে আসেনি।
কলমপতি মহাজন বাড়ীর বাসিন্দ্বা যারা ঘরবাড়ীতে ছেড়ে চলে গেছে ঐসব পরিবারের পুকুরের অংশ কেউ বায়নানামা করে কেউ ক্রয় করছে দাবী করে জবর দখল করে রেখেছে বলে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দ্বা তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান। কলমপতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশে মহাজন বাড়ীর পুকুরের কিছু অংশ জবর দখল করে নিয়ে গেছে এলাকার প্রভাবশালী এক ব্যক্তি । এছাড়া ও রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় সরকারের নিষেধাঞ্জা অমান্য করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কোন অনুমতি না নিয়ে ব্যাপক হারে প্রতিদিন গাছ কাটা হচ্ছে। রাউজানের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপক হারে কাটা গাছ প্রতিদিন রাউজানের বিভিন্ন সড়ক দিয়ে ট্রাক, জীপ, টমটম ভর্তি করে করাতকল ও ইটের ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে কাঠ পরিবহন করা হলে ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরবতা পালন করছে । রাউজানে এই ভাবে গাছ কাটা হলে রাউজান বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়বে বলে এলাকবাসী অভিমত প্রকাশ করছেন।
রাউজান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ছত্রপাড়া ও ডাবুয়া ইউনিয়নের কলমপতি এলাকায় গাছ কাটার ব্যাপারে অনুমতি নিয়েছে কিনা চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের আওতাধিন ইছামতি রেঞ্জ এর রাউজান ঢালার মুখ বন বিভাগের ষ্টেশন অফিসার আইয়ুব আলী মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে, বন কর্মকর্তা আইয়ুব আলী মন্ডল বলেন, গাছ কাটার কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: সাহেদুর রহমান মোরশেদ
মোবাইল: ০১৮১৮ ১১৭৪৭০, ইমেইল: raozan786@gmail.com
© raozanbarta24.com 2023. All Rights Reserved