রাউজানে কলেজ ছাত্র খুন, গণপিটুনিতে আসামী নিহত
লেখক : সাহেদুর রহমান মোরশেদ | প্রকাশ: ২০২৩-০৯-১২ ০০:৪৯:৫৪

রাউজানবার্তা প্রতিবেদকঃ
রাউজানে অপহরনের ১৪দিন পর শিবলী সাদিক হৃদয় (১৯) নামে কলেজ ছাত্রের খোজ মিলল খন্ড বিকন্ড দেহে। যার কারনে অপহরনকারির স্বীকারোক্তিতে পাহাড়ের ঘুমকরা গর্তের মধ্য লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে ফিরিয়ে আনার সময় বিক্ষুদ্ধ জনতা পুলিশের পিকআপ ভাংচুর করে অপহরনকারীকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিঠুনি দিয়ে মেরে ফেলে অপহরনকারী উমচিং মারমা (২৬) কে।
পরে রাউজান থানার ওসিসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষন ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশের উপ পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন, কিশোর, মো.আজিজ আহত হয়। ১১ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আশরাফ শাহ মাজার রোডে এই ঘটনা ঘটে।
এর আগে ভোড় ৫টার সময় পুলিশ অপহরনকারী তিন জনকে রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। এতে গণপিঠুনিতে নিহত উমংচিং মারমা (২৬) রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালীর বেতবুনিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্ব ভঙ্গিপাড়ার উথোয়াইমং মারমার ছেলে। আটক অংথুইমং মারমা (২৪) ও একই এলাকার সাপমারা পাড়া গ্রামের আপ্রুমা মারমার ছেলে। আটক অন্যজন সুইচিংমং মারমাও (২৪) একই জেলার কাপ্তাই থানার মিতিঙ্গাছড়ি গ্রামের সাচিং মারমার ছেলে।
জানা যায়, অপহরনকারীরা রাউজানের অপহরনকারীর একটি খামারে চাকুরী করত। সেখানে ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিল শিবলী সাদিক হৃদয়। এসময় কাজ নিয়ে তাদের মধ্য বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। এই ঘটনার জেড় ধরেই এই ঘটনার সৃষ্টি বলে অপহরনকারীরা জানিয়েছেন। এরই জেড় ধরে রাউজানের খামার থেকে ১৪ দিন আগে ২৭ আগস্ট অপহরন হয় কলেজ ছাত্র ও খামার ম্যানেজার শিবলী সাদিক হৃদয়। এতে অপহরণের দুই দিন পরঅপহরণকারীরা মায়ের মুঠোফোনে ফোন করে ছেলে পরিচয় দিয়ে কলেজছাত্র শিবলী সাদিক বলিয়ে দেয়। তখন ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। পরে সাড়া না পেয়ে গত ৩১ আগস্ট আবার ফোন করে দুই লাখ টাকা চায়। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর শিবলীর বাবা দুই লাখ টাকা নিয়ে বান্দরবান জেলা সদরের পূর্বনির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দুজন লোকের হাতে টাকা তুলে দেন। তাঁদের বলা হয় ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৪ দিন পর গতকাল রবিবার ভোড়ে অপহরনকারিদের আটক করতে সক্ষম হয় রাউজান থানা পুলিশ।
এতে গতকাল ভোড়ে তাদের নিয়ে লাশ আনতে গেলে সেখানে আসার পথে অপহরনস্থল রাউজানের কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়ার মুরগি খামার এলাকায় আশরাফ শাহ মাজার সড়কে বড় বড় গাছ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে দেয়। এতে গাড়ি গতিরোধ করে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিঠুনি দেয়। সেখান থেকে উমংচিং মারমাকে উদ্ধার করে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। অপহরনকারীকে ছিনিয়ে নিয়ে শতশত নারী পুরুষ ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ে। শিবলী সাদিক হৃদয় কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। তাঁর বাবা মুহাম্মদ শফি পরিবহন ব্যবসায়ী।
এ বিষয়ে রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তিমতে আমরা লাশ উদ্ধারের পর ফেরার পথে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি গতিরোধ করে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। পরে গণপিটুনিতে মুল আসামি মৃত্যু বরন করেন। এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবং একটি মামলা রুজুর কথা তিনি জানান।
© 2019 - All Rights Reversed raozanbarta24.com
Web Developed By : HostBuzz Inc